20% OFF

কথার উপরে তথাস্তু বসে থাকে । সুকান্ত সিংহ । কাব্যগ্রন্থ

Kothar upore tothastu bose thake. Collection of bengali poems by Sukanta Sinha

120.00

Availability: In stock

“…
‘কথার উপরে তথাস্তু বসে থাকে’ সুকান্ত সিংহের এই কবিতার বইটি কয়েকদিন হলো কিনেছি। ধ্যানবিন্দু থেকে প্রকাশিত। এর আগে কবির ‘যোগিয়া’ পড়েছিলাম। সেই বইয়ের যে অভিনিবেশ তা এখনো রয়ে গেছে। গেরুয়া রঙের ছোটো পুস্তিকায় কালো রঙের ‘যোগিয়া’ লেখা। আর একটা একতারা আঁকা। প্রতিটি লেখা আসলে সুদূরের। অদ্ভুত সহজতা অথচ কি গভীর নিবৃত্তি। আমার প্রথম উপন্যাসের উৎসর্গ পত্রেও আমি ‘যোগিয়া’ বইটির একটি কবিতা রেখেছিলাম।
আর এবার সংগ্রহ করেছি ‘কথার উপর তথাস্তু বসে থাকে’। অদ্ভুত রঙের এই বই। প্রচ্ছদের মাঝ বরাবর খানিকটা মুছে যাওয়া আলপনা। ঘরের দেওয়ালে বা মেঝেতে পায়ে পায়ে যেমন আলপনা মুছে যায়! লাল রঙে লেখা বইয়ের নামের মধ্যে শুধু ‘বসে’ শব্দটি সাদা। আসলে অনুভূতিপ্রবণ মানুষের অন্তরে এক সন্ন্যাসী থাকে। তার নির্লিপ্তি সংসারের সমস্ত ছোটোখাটো আকাঙ্ক্ষা আর প্রত্যাশার মধ্যে যেন গোপনে থেকে যায়। হৃদয়ের গহীনে এই নির্লিপ্তি নিয়েই আমাদের প্রত্যেকটি চাওয়া – পাওয়া যেন আমাদের জীবনকে নির্ধারণ করে দেয়। খুব ছোটো ছোটো মুহূর্ত, হয়তো খুব তুচ্ছ কোনো ইচ্ছে, আর সংসারী অথচ এলোমেলো কিছু মানুষের আনাগোনা এই বইয়ের পাতা জুড়ে। আর তাই এসব মানুষ সংসারে থেকেও সংসারের ভিড়ে মিশে যায় না। ‘নির্জনতলায়’ তাদের বসিয়ে রেখে চলে যায় ‘শস্যবাহকেরা’। ‘হাওয়ামোরগ’-এর ঘুরে ওঠার জন্য অপেক্ষা করে আছে ‘ঘুড়ি ওড়ানোর বয়স’। তার আকুলতা না পাওয়াকে ছাপিয়ে প্রত্যাশার কথা বলে। ‘অন্নকূটের দেবী’ বীজতলায় স্তন দেন। প্রশান্তি নেমে আসে। প্রশান্তি থাকে এই কবিতার বইয়ের ‘বাবা’ চরিত্রেও। বাবা আসলে ছাতার মতো আশ্রয়। সেই আশ্রয় শুধু সন্তানের জন্য নয়। বাড়ির একমাত্র ছাতাটিতে আশ্রয় পায় বিশ্বাসকাকু। আর বাবা ঝুপ্পুস ভিজে বাড়ি ফিরে ছাতার কথা মায়ের কাছে গোপন করতে চায়। এই যে সরল গোপনীয়তা এ যেন সংসারের সমস্ত অভাববোধকে এক নিমেষে হারিয়ে দিয়ে যায়। আবার আর একটি কবিতায় ‘চৈত্রদহন মাথায় নিয়ে ছাতা হারিয়ে চুপি চুপি ঘরে ঢোকে বাবা!’

এমন পিতার সন্তান পিতৃতর্পণের দিনে আধোয়া আপেল খায়। খিদের কথা তাই বারবার উঠে আসে এই বইতে। উষ্ণ ভাতের গন্ধ ছড়িয়ে থাকে। তাতে থাকে মায়া, প্রলেপ জড়ানো কোনো দুঃখবোধ। আশৈশব না পাওয়াদের মধ্যে যে লালিত কিন্তু ক্ষোভহীন, বীতরাগহীন। আসলে জন্ম এখানে যতিচিহ্নহীন প্রত্যাবর্তন আর মৃত্যু দুপুরের গৌড় – সারং। অন্ধকারের কথা তাই এই কবিতার বইয়ে ঠাঁই পায় না। আলোর কথাও নয়। সুখের কথা নয়, দুখের কথাও নয়। এই বই জীবনকে তার সমস্ত অনিশ্চয়তা নিয়েই গ্রহণ করেছে, আর লাভ করেছে সন্ন্যাসীর প্রশান্তি। তাই তো এই কবিতার বইতে আশ্চর্য দিঘির মতো মানুষের সন্ধান পাওয়া যায়। সেই যুবক যে পলাশ কুড়োনোর চাকরি চায়, অথবা যে পাখির বাসা সারিয়ে দিতে চায় তারাই তথাস্তু হয়ে বসে থাকে আমাদের গভীর ভোগবাদী জীবনের উপরে। একটিও কঠিন শব্দ ব্যবহার না করে জীবনকে যিনি এভাবে প্রকাশ করতে পারেন সেই কবির প্রতি একরাশ বিস্ময় রইল।”

পাঠ প্রতিক্রিয়া  রিনি গঙ্গোপাধ্যায়।

Reviews

There are no reviews yet.

Recently Viewed Products
You have no recently viewed item.